শুরুতেই বলে রাখতে স্বচ্ছন্দভোদ করছি যে, বিষয়টা একটু বুঝিয়ে লিখতে গিয়ে লিখাটা অনেক লম্বা হয়ে গেছে। তাই বলতেই হচ্ছে আপনি যদি ধৈর্যশীলদের একজন হয়ে থাকেন লিখাটা শুধুই আপনার জন্য এবং আপনার ভবিষ্যৎ এর জন্য। আমারা যারা ব্যবসা করি আমাদের সবাইকে মার্কেটিং বিষয়টা নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ মার্কেটিং ছাড়া কোনো ব্যবসায়ই টকে থাকতে পারেনা। মার্কেটিংই হলো ব্যবসায়ের প্রাণ। যার মার্কেটিং যত ভালো তার ব্যবসায় তত উন্নত। প্রতিযোগী এই ব্যবসায়ের যুগে কে কার থেকে ভালো মার্কেটিং করে কাস্টমারদের মন জয় করে বাজার ধরে রাখতে পারে এমন প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত।
এক্ষেত্রে অনেকেরই মাঝে একটি প্রশ্ন হয় যে আমরা পণ্য বা ব্যবসায়ের প্রচারের জন্য প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করি, আবার ডিজিটাল মার্কেটিং করা কেন প্রয়োজন ? হ্যাঁ এই লিখাটা তাহলে আপনার জন্যই।
আপনি ভেবে দেখুন আপনার ব্যবসায়ের প্রচলিত মার্কেটিং বলতে আসলে কি বুঝাচ্ছেন? পোস্টার/ব্যানার/লিফলেট/বিলবোর্ড/মাইকিং/দেয়াল লিখন/অফিস ভিজিট ইত্যাদি। এছাড়া আর কিছু উল্লেখ্যযোগ্য নয় বলে আমার মনে হয়।
এবার ভেবে দেখুন, যতগুলো পদ্ধতি এর কথা লিখলাম, এদের কোনো পদ্ধতি এর মধ্যে আপনি টার্গেট করে মার্কেটিং করতে পারবেন কি না? অবশ্যই না। যেমন- ধরুন আপনি শুধু ছেলেদের জন্য বিজ্ঞাপন দিবেন বা ২০-২৮ বছর এর বয়সী ছেলেদের অথবা ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য বিজ্ঞাপন দিবেন। তাহলে কি আপনি পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট, বিলবোর্ড, মাইকিং, দেয়াল লিখন/অফিস ভিজিট এসবের মাধ্যমেই সেই তাদের কাছে আপনার বিজ্ঞাপন পৌছাতে পারবেন? আবার আপনি ঢাকার উত্তরাতে থাকলে ধানমন্ডিতে অথবা নোয়াখালীর চৌমুহনীতে থাকলে মাইজদিতে পণ্য বিক্রয় করা আপনার জন্য অবশ্যই কষ্টসাধ্য, কারণ অনেক ক্রেতা তাদের নিকটবর্তী দোকান থেকে পণ্য কিনে নেন ।
এবার যদি আপনি টিভি বা রেডিও এর কথা ভাবেন, তাহলে বলতে হয় এই দুই পদ্ধতিতে বিজ্ঞাপন এর খরচ এতই বেশি যে, সব ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে এখানে বিজ্ঞাপন দেয়া সম্ভব নয়। সুতরাং আপনি বুঝতেই পারছেন, প্রচলিত বিজ্ঞাপনের সমস্যাগুলো কোথায়। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতিতে অবলম্বন করে আপনি অনলাইন এ আপনার দোকান খুলতে পারছেন, টার্গেট করে কম খরচে বিজ্ঞাপন দিতে পারছেন, দেশের যে কোন প্রান্তের মানুষকে কাস্টমার হিসেবে টার্গেট করে পণ্য বিক্রয় করতে পারছেন, আপনার কাস্টমারদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক তৈরি করে কাস্টমার বাড়াতে পারছেন এবং আপনার ব্যবসায়ের নতুন নতুন অফারগুলো খুব সহজেই যখন তখন আপনার ইচ্ছেমত তাদেরকে জানিয়ে দিতে পারছেন। এছাড়া, এখনতো মানুষজন টিভি কম দেখে, অবশ্য টিভিতে এড দেখলে আপনি নিজেও বিরক্ত হন, দেয়াল লিখন এ কম তাকায়, লিফলেট হাতে নিয়ে একটু দূরে গিয়েই ফেলে দেয় । কিন্তু ভেবে দেখুন মানুষ এখন অনেক সময় অনলাইনে কাটায়, যেমন ফেইসবুকে, ইউটিউবে, গুগুলে, ইন্সটাগ্রামে। ও হ্যাঁ, আপনি নিজেও ত মাঝেমধ্যে নিজের কেনা টাকার মোবাইল ডিসপ্লেতে অন্য কারো কিছু কিছু এড দেখে থাকেন। কখনো কি মনে প্রশ্ন জাগেনা কিভাবে করে এসব? কারা করে? কেনো হয়? । হ্যাঁ বন্ধু এটাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কম খরচের একটি বিশাল বিজ্ঞাপনের কেরিশমা। একে বলে ডিসপ্লে এডভারটাইজিং। সুতরাং বুঝতে পেরেছেন স্বল্পসময়ে একজন সফল ব্যবসায়ী হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি গ্রহন করা উচিত। আপনার ব্যবসায়ের জন্য এবং আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য। এই মার্কেটিং পদ্ধতির সবচেয়ে বড় যে সুবিধাটি রয়েছে তা হল কাস্টমার বা গ্রাহকগন যেকোন সময়, পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে আপনার পণ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এতে আপনার নতুন নতুন কাস্টমার তৈরি হবে, এবং তাদের কাছে আপনি একাধিকবার পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। এছাড়া এটি এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে সকল ধরনের পণ্য বা সার্ভিস যেমনঃ বিনোদন, খেলা, শিক্ষা, পণ্য, ডিজিটাল পণ্য, সবকিছু বিক্রি করা যায়। ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষ করে ছোট বা নতুন ব্যবসায়ের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে কারণ এই মার্কেটিং এ খরচ অনেক কম তাই জ্ঞানীও বুদ্ধিমান ব্যবসায়িগণ এই পদ্ধতিতেই মার্কেটিং করে থাকেন। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করা জানেন তাহলে আপনি চাইলে নামমাত্র পূজীতে আপনার পণ্যের মার্কেটিং করতে পারেন। আবার আপনি চাইলে টার্গেট পরিমাণ বাজেটে খুব অল্প সময়ে অনেক ভালো ফলাফল নিয়ে আসতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং করা হয় প্রধানত ৪টি পদ্ধতিতে। প্রত্যেকটি পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে কাস্টমারদের টার্গেট করে বলে প্রতিটি মাধ্যমই অনেক অনেক জরুরী। ১। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি ব্যাপক জনপ্রিয় পদ্বতি হল ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও। এই এসইও হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে গুগল থেকে ভিজিটর বা কাস্টমার আনা হয়। গুগল হচ্ছে সব ধরনের কাস্টমারের একটি বড় উৎস। আমরা কোন কিছু খুঁজতে সর্বপ্রথম গুগল কে ব্যবহার করি। কারণ এই গুগুলে সব কিছু আছে। শুধুই আপনার প্রশ্নের অপেক্ষায় আছে। আপনি গুগুলে গিয়ে যা লিখে সার্চ করবেন তাকেই Keyword বলে। ধরুন আপনি লিখে সার্চ করলেন 'Easy T-shart' তখন সার্চ রেজাল্টের প্রথমে যেই ওয়েবসাইট টি আসে সেটিতেই সবচেয়ে বেশি ভিজিটর পাওয়া যায় এবং বিক্রিও বেশি হয় তাদের।
দেখুন গুগলে প্রতিমাসে 'easy t shirt' লিখে ৭২০ জন সার্চ করে এবং ইজি ফ্যাশন ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাহায্যে একতা ওয়েবসাইট বানিয়ে এস ই ও করে গুগলের প্রথম পেইজে আছে।
চলুন একটা ছোট্ট অঙ্ক করি এবং জানি ইজি ফ্যাশন অনলাইন থেকে কেমন আয় করছে। যেই ৭২০ জন গুগলে ইজি টিশার্ট কিনার জন্য সার্চ করে এদের মধ্যে যদি ৫০০ জন অনলাইন থেকে তাদের টিশার্ট কিনে, যেই টিশার্ট এর দাম ধরি ৭০০ টাকা তাহলে ৫০০*৭০০= ৩,৫০,০০০ টাকা আয় করেন। এই আয়ের রেজাল্ট টা যদি শুধুমাত্র একতা কিওয়ার্ড এর হয় তাহলে বাকি কিওয়ার্ড গুলোর আয় মিলে অবশ্যই অনেক বেশি হবে।
আর এই Keyword ভিত্তিক সার্চ রেজাল্টে রাঙ্কিং করাই হল এসইও। অর্থাৎ কাস্টমার গুগুলে গিয়ে কি লিখে সার্চ করলেই আপনার প্রতিষ্ঠানকে পেয়ে যাবে সে বিষয়গুলো নিয়েই এসইও করা হয়। যদি কেউ তার ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটের এসইও না করে তাহলে সে অনেক বড় অংকের একটি ইনকাম হারাবে। কারণ কাস্টমার তাকে খুজেই পাবেনা। যারফলে তার ব্যবসায়ের মুনাফা বৃদ্ধিতে ব্যহত করবে। তাই এসইও করা বাধ্যতামুলক। ২।সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ
ফেসবুক সৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীতে সোশ্যাল মিডিয়া নামক এক ভার্চুয়াল পৃথিবীর আবিস্কার হয়েছে। যার প্রভাব প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে ত পাচ্ছেই। এখন মানুষ ঘুম থেকে উঠেই প্রথম ফেসবুকে বন্ধুরা কে কি লিখেছে তা দেখতে পছন্দ করে, টুইটারে কি টুইট করেছে তা চেক করতে চায়, ইন্সটাগ্রামে নিজের একটি ছবি দিতে চায়। অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের সাথে নিভিড়ভাবে জড়িত হয়ে যাচ্ছে। এই জন্য আপনি যদি কোন এক স্থান থেকে সকল ধরনের প্রচুর পরিমান কাস্টমার বা গ্রাহক আপনার করে পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অন্যান্য যেকোন মাধ্যম থেকে কম খরচে অনেক বেশি কাস্টমার আকর্ষন করা যায়। সোশ্যাল মিডিয়া মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, পিন্টারেস্ট, লিঙ্কডিন ইত্যাদি অন্যতম। তাই এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে মার্কেটিং অবশ্যই করা উচিত।
ইমেইল মার্কেটিংঃ বর্তমান সময়ে আমরা কোন তথ্য বা ফাইল আদান প্রদান করার জন্য সহজ ও নিরাপদ ভাবে যে মাধ্যমটি ব্যবহার কারা হচ্ছে তা হল ই-মেইল। এই ই-মেইলের মাধ্যমে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে ই-মেইল মার্কেটিং বলে। আপনি যদি USA বা অন্য কোন উন্নত দেশে ডিজিটাল মার্কেটিং করার চিন্তা করেন তাহলে ইমেইল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নাই। তারা সকল ধরনের কাজ ইমেলের মাধ্যমে করতে পছন্দ করে বলে প্রচুর ইমেল ব্যবহার করে। তাই এই মার্কেটিং খুবই কার্যকর। বাংলাদেশেও এর যথেষ্ট ব্যবহার রয়েছে যা আপনি ঘাটাঘাটি করলেই জানতে পারবেন।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংঃ সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে একটু আগেই উল্লেখ কারা হয়েছে। গুগল এখন জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিশ্বসেরা। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২.৩ মিলিয়ন মানুষ গুগল ব্যবহার করে। সে জন্য গুগল থেকে প্রচুর পরিমান কাস্টমার পাওয়া নিশ্চিত করতে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করা খুবই প্রয়োজন হয়। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হল একটি পেইড মার্কেটিং অর্থাৎ টাকার পদ্ধতি। গুগল কে টাকার দেওয়ার মাধ্যমে গুগল নির্দিষ্ট কীওয়ার্ডে সার্চ রেজাল্টের প্রথমে আপনার ওয়েব সাইটের লিঙ্ক দেখাবে। যার মাধ্যমে আপনি প্রচুর পরিমার টার্গেটেড ভিজিটর বা কাস্টমার পাবেন। যা আপনার আপনার ব্যবসায়াকে সফল ব্যবসায় পরিনত করবে।
আপনি যদি এই পদ্ধতি ব্যবহার না করেন তাহলে হয়ত আপনার প্রতিযোগী যারা আছেন তারা আপনার এই কাস্টমার সোর্স ব্যবহার করে আপনার থেকে এগিয়ে থাকতে পারে। তাই প্রতিযোগী আসার আগে আগেই নিজেই গড়ে তুলুন ডিজিটাল মার্কেটিং সিস্টেম। উপরের আলচোনার মাধ্যমে এটাই বুঝাতে চেয়েছি যে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রতিটি বিভাগ বা মাধ্যম অর্থাৎ পুরো ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার ব্যবসায়ের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ন। যা আপনার ব্যবসায়ের উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে।
সুতরাং, উপরের কথাগুলো বুঝতে পেরে আপনিও যদি নিজের প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যবসায় রুপান্তর করে লাভবানদের একজন হতে চান, তাহলে Hasty Rank কোম্পানীটিই হবে আপনার লক্ষ্যে পৌছানের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তের সহায়ক। আমাদের নোয়াখালীতে এই প্রথম এমন একটা সেবাদান কারী প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। যার প্রতিটা কর্মি গুগুল থেকে সার্টিফিকেট প্রাপ্ত, এবং দেশের বাহিরের বিভিন্ন অনলাইন কোর্সের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গই এখানে কর্মরত আছেন।
আরেকটি মজার বিষয় আপনি নিশ্চই জানেন যে, ২০২০ সালেই বিশ্ববিখ্যাত আমাজন কোম্পানী বাংলাদেশে প্রবেশ করতেছে। তখন যে যে প্রতিষ্ঠানের অনলাইন ই কমার্স সাইট থাকবে তারাই মার্কেটের স্টার হয়ে সুবিধা গ্রহন করবে। অতএব একজন সফল ব্যবাসী হিসেবে প্রতিযোগীদের পিছে রেখে এগিয়ে যান Hasty Rank এর হাতে হাত রেখে। প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে জানতে হলে ভিজিট করুন www.hastyrank.com
ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য অন্তর থেকে ধন্যবাদ।
মোঃ নুর হোসাইন
Content writer of Hasty Rank Ltd.







0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন